ইদানিং ঘরে বাহিরে প্রচুর গরম পড়েছ। এই গরম তাপদাহের সময় অনেকেই বাইরে বেরোলে প্রচুর পরিমাণে ঠাণ্ডা কোমল পানীয় পান করে না। কোমল পানীয় পান করে আমার হয়ত স্বল্প সময়ের জন্য স্বস্তি পেয়ে থাকি।এই অতিরিক্ত কোমল পানীয় পান ডেকে আনে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা যেমন: স্থূলতা, প্রজননক্ষমতা হ্রাস, ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ আরও ভয়াবহ জটিলতা তা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। আজ আমরা অতিরিক্ত কোমল পানীয় পানের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াসমূহ আলোচনা করব।
সূচিপত্র
কোমল পানীয় পানের ক্ষতিকর দিক সমূহ
শেষকথা
তথ্যসূত্র
কোমল পানীয় পানের ক্ষতিকর দিক সমূহ:
অতিরিক্ত চিনি
সফটড্রিংস বা কোমল পানীয়তে থাকে অতিরিক্ত চিনি। যা আমাদের দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। সেইসাথে চিনিতে থাকা অতিরিক্ত ক্যালোরি দেহে মেদের পরিমাণ বাড়ায় যা স্থূলতার মূল কারণ। এছাড়াও আমাদের যখন ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যায় তখন দেহে আরো রোগ বাসা বাঁধতে শুরু করে যেমন ডায়াবেটিস্, রক্তচাপ এবং হৃদরোগ ইত্যাদি। তাছাড়াও এই কোমল পানীয়গুলিতে থাকা অতিরিক্ত চিনি কিডনী ও অগ্ন্যাশয়ের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
মুখের জন্য ক্ষতিকর
কোমল পানীয়তে অতিরিক্ত চিনির পাশাপাশি কার্বনও থাকে, যা দাঁতের জন্য খারাপ।এই উপাদানগুলি আমাদের মুখে ব্যাকটেরিয়ার জন্ম দেয় যার ফলে মুখে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয় এবং দাঁতের এনামেল ক্ষয় হয়ে থাকে। আর দাঁতের এনামেল ক্ষয় হলে দাঁত দুর্বল হয়ে পড়ে।
বিষাক্ত রাসায়নিক
ইথিলিন গ্লাইকল কোমল পানীয়তে এন্ট্রি ফ্রিজার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ইথিলিন গ্লাইকল মূলত আর্সেনিক এর ন্যায় একধরণের ক্ষতিকর বিষ।এই ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ চর্মরোগ, লিভার সিরোসিস, ত্বকের ক্যান্সার, মুত্রাশয়ে গোলযোগ, কিডনি জটিলতা সৃষ্টি করে।
তাছাড়াও কোমল পানীয়তে ফসফরিক এসিড ঝাঁঝালো স্বাদ তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়। যা শরীরে দীর্ঘদিন যাবত জমা হলে হাঁড় ক্ষয় হতে শুরু করে।
পানি শূন্যতা
অতিরিক্ত কোমল পানীয় পান শরীরকে পানি শূন্য করে দেয়। সাধারণত আমাদের অনেকেই গরমকালে তৃষ্ণা পেলেই পানির পরিবর্তে কোমল পানীয় পান করি কিন্তু তৃষ্ণা মেটায় না বরং তৃষ্ণা আরও বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও কোমল পানীয়তে বিদ্যমান ফসফরিক এসিড আমাদের দেহের ম্যগনেশিয়াম ও ক্যালশিয়ামের মাত্রা কমায়।এই ম্যআগনএশইয়আম ও ক্যালসিয়াম শরীর গঠনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।এই রাসায়নিক উপাদানগুলো আমাদের হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। আর সেইসাথে ক্যালসিয়ামের অভাবে হাড় নরম ও পেশী সংকোচন হয়।
শ্বাসতন্ত্রের রোগ
কোমল পানীয় পানের জন্য আপনি তাৎক্ষণিকভাবে গলা বা শ্বাসতন্ত্রের জটিলতার সম্মুখীন হতে পারেন। মানুষের নাক, গলায় তথা শ্বাসতন্ত্রের শুরুর দিকের অংশে থাকে অসংখ্য সিলিয়া। শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে আমরা যেসব ধূলিকণা, ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস গহ্বরে নেই, এই সিলিয়াগুলো সেগুলোকে শরীরের ভেতরে ঢুকতে বাধা দেয়। কোমল পানীয় পান করলে এসব সিলিয়ার কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। যা থেকে শুরু হয় টনসিলাইটস, ফেরিংজাইটিস, ব্রংকাইটিস বা নিউমোনিয়ার মতো বিভিন্ন শ্বাসতন্ত্রের রোগ।
শেষকথা:
তাই এখন থেকে কোমল পানীয়করাক করার আগে উপরে বর্নিত কোমল পানীয় এর ক্ষতিকারক দিকগুলো বিবেচনা করে নিজেদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা হতে হবে এবং নিয়মিত শরীরচর্চা ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য।
তথ্যসূত্র:
https://www.healthline.com/nutrition/13-ways-sugary-soda-is-bad-for-you